যে কোনো অপশক্তিকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

২০২১ সালে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছি। এমন এক সময়ে আমরা এই উৎসব উদযাপন করছি যখন সারা বিশ্ব এমনকি বাংলাদেশের শত্রুরাও বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণে তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছে। বাংলাদেশ তথা বাঙালি জাতির জন্য এ ছিল এক অনন্য সাধারণ উৎসব। পৃথিবীর প্রায় সব রাষ্ট্র এবং বিশ্ব নেতারা একদিকে দীর্ঘ মুক্তি সংগ্রাম আর এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বে এক আদর্শ রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেয়েছে। সমগ্র বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ অবিশ্বাস্য গতিতে এগিয়ে চলেছে l স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে যখন এই সাফল্যের উৎসব উদযাপিত হচ্ছিল এবং সেই উদযাপনে বিশ্ব নেতাদের সকলেই যখন বাংলাদেশের জয়গান গাইছিল, ঠিক সেই সময়ে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে খাটো করার জন্যে, বাংলাদেশের সকল অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি চক্র ঘৃণ্য উন্মাদনায় মেতে উঠেছিল। এই কাজে তারা সেই মধ্যযুগীয় কায়দায় ধর্মকে ব্যবহার করেছে আর ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে লেলিয়ে দিয়েছে। আমরা বহুবছর ধরে দেখে আসছিলাম বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি গোষ্ঠী আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শগুলোকে তারা নিজেদের স্বার্থ পরিপন্থী মনে করে। এই গোষ্ঠী বারে বারে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাকে আঘাত করেছে। তারা বাংলাদেশের এই আকাশচুম্বী সাফল্য ও অর্জনকে কোনোভাবে মেনে নিতে পারছে না। তারা শুরু থেকেই বাংলাদেশের আদর্শ ও চেতনা বিরোধী ছিল। তাই তারা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই মহোৎসবে ফুঁসে উঠেছে। তারা সবকিছু ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়েছে। তাদের সকল ক্ষোভ এই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। কিন্তু তারা ভুলে গেছে, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশ আজ অনেক শক্তিশালী। পৃথিবীর অনেক শক্তিশালী রাষ্ট্রের সাথে প্রতিযোগিতা করে বাংলাদেশ আজ তার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে। রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে যোগ্যতার প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আজ চ্যাম্পিয়ন। এই রাষ্ট্রকে দমাবার সাধ্য কারো নেই।

বাংলাদেশ বিরোধী এই অপতৎপরতা তথা উন্মাদনা সৃষ্টির অপচেষ্টায় ক্রীড়নক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে মৌলবাদী ও ধর্মান্ধ গোষ্ঠী। কিন্তু মূল ষড়যন্ত্রকারীর ভূমিকায় রয়েছে বিএনপি-জামাত। ইতিমধ্যে এটি পরিষ্কার হয়েছে। লন্ডন থেকে কারা নীলনকশা তৈরি করছে, টেলিফোনে কারা যাত্রীবাহী বাস এবং যানবাহনে আগুন দিয়ে নিরীহ মানুষ মারার নির্দেশ দিচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার লক্ষ্যে কারা অর্থের যোগান দিচ্ছে, ইতিমধ্যে এগুলো আমরা জেনে গেছি।

কারা কাপুরুষের মতো বিদেশে বসে ফেসবুক আর ইউটিউবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিশোদগার করছে এবং বিদেশে বসে বাংলাদেশের ভেতরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার আহ্বান জানাচ্ছে, তাদের প্রত্যেককে আমরা তালিকাভুক্ত করছি। এই সাজানো বাংলাদেশকে কারা ধ্বংস করতে চায়, কারা এই আকাশচুম্বী উন্নয়নকে নস্যাৎ করতে চায়, তাদের নাম একে একে উন্মোচিত হচ্ছে।

আমরা তাদের পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশ আজ যে কোনো অবস্থায় এ ধরণের অপশক্তি ও অপতৎপরতা প্রতিহত ও নির্মূল করার সক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশের নতুন প্রজন্ম একটি স্বপ্নপ্রেমী প্রজন্ম। তারা বিশ্বপর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। তাদের বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

একটা কথা বলতে চাই, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বাংলাদেশ অনেক বেশি মানবিক। তার এই মানবিকতার গল্প আজ বিশ্বব্যাপী মানুষের মুখে মুখে। তবে এটি ভুলে গেলে চলবে না, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ আজ অনেক বেশি শক্তিশালী ও পরাক্রমশালী। বাংলাদেশের স্বার্থে, বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে, এদেশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার স্বার্থে শেখ হাসিনার বাংলাদেশ যে কোনো অপশক্তিকে কঠোর হাতে দমন করতে প্রস্তুত। যে কোনো অপশক্তিকে নির্মূল করার শক্তি এই রাষ্ট্রের রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে দেশবিরোধী কোনো অপতৎপরতার ঠাঁই নেই। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা গত এক যুগ ধরে দিন রাত পরিশ্রম করে এবং জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নানামুখী যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।  শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বিশ্বে আজ এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, এক আদর্শ রাষ্ট্র। এই রকম এক রাষ্ট্রের ক্ষতি বাঙালি জাতি মেনে নেবে না।

গুজব আর মিথ্যাচার করে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড চালানো যাবে না। বাংলাদেশের মানুষ সব জানে, সকল তথ্য তাদের কাছে আছে। ষড়যন্ত্রকারীদের মনে রাখা উচিত, নিকট অতীতে এ জাতীয় সকল অপতৎপরতা এবং ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড রাষ্ট্র কঠোর হস্তে দমন করেছে। যে কোনো অপশক্তিকে আবারও প্রতিহত করতে প্রস্তুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রিয় বাংলাদেশ।

এটি আমাদের মনে রাখতে হবে, এই রাষ্ট্র আমাদের সকলের। এর নিরাপত্তা, সম্মান ও ভাবমূর্তি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। ষড়যন্ত্রকারীদের চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দিতে চাই, রাষ্ট্রবিরোধী অপতৎপরতা অবিলম্বে বন্ধ কর, তা নাহলে রাষ্ট্র তোমাদের প্রতিহত করবে, প্রয়োজনে নির্মূল করবে।